চট্টগ্রামে দুই ভাইয়ের করুণ মৃত্যু

প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২০

চট্রগ্রাম সংবাদদাতা: চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসিন্দা দুই ভাই মো. শাহ আলম ও মো. শাহ জাহান। করোনা উপসর্গ নিয়ে চার দিন আগে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই জনেরই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাৎক্ষণিক প্রয়োজন হয় আইসিইউর। কিন্তু হাসপাতালে কান্না করেও মেলেনি একটি আইসিইউ।

চট্টগ্রামের প্রায় বেসরকারি হাসপাতাল ছুটে গিয়ে জোটেনি আইসিইউ শয্যা। অবশেষে চিকিৎসার অভাবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বড় ভাই শাহ আলম। ছোট____ভাইকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেও আইসিইউ না পাওয়ায় বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ৮ ঘণ্টার মাথায় মারা যান ছোট ভাইও।

গত শুক্রবার (৫ জুন) রাতে চট্টগ্রামে আইসিইউর অভাবে এভাবে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় তরুণ এই দুই ভাইকে। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই বন্দর নগরীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে কিংবা উপসর্গে আক্রান্ত অনেককে আইসিইউর অভাবে চলে যেতে হচ্ছে না ফেরার দেশে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গড়ে ৫ শতাংশের আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু চট্টগ্রামের দুই কোটি মানুষের করোনা রোগীর চিকিৎসায় আইসিইউ-ভেন্টিলেটর আছে ১০টি। দুই মাসে একাধিক হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেসব পরিকল্পনা সীমাবদ্ধ আছে কাগজে-কলমে।

২ মাস আগ থেকে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগীদের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র জেনারেল হাসপাতালে ৮টি আইসিইউ শয্যা চালুর কথা থাকলেও সেগুলোও দেখেনি আলোর মুখ।

গত ৩১ মে বেসরকারি হাসপাতালে কভিড-১৯ ও নন কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত ও তদারকি করার জন্য সাত সদস্যের একটি সার্ভেইল্যান্স কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার।

এদিকে সার্ভেইল্যান্স টিমের আহ্বায়ক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, আক্রান্তের তুলনায় অধিকাংশ মানুষ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। আইসিইউ সেবাপ্রদান ও রোগী ভর্তি করতে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমরা নৈতিক প্রেশার দিচ্ছি।

সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে আইসিইউ চালু করা যায়নি।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটির সমন্বয়কারী ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, টাকা হারানোর ভয়ে মানুষের জীবন নিয়ে অন্যরকম খেলায় মাতে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকরা। আইসিইউর অভাবে প্রতিদিন যে হারে রোগী মারা যাচ্ছে তার জন্য স্বাস্থ্য প্রশাসন দায়ী।

 

ভুলুয়া বাংলাদেশ/এএইচ