ছেলের বউয়ের নির্যাতনে শেষ বয়সে মায়ের ঠাঁই হলো রাস্তায়

প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২০

এসএম স্বপন(যশোর)অফিসঃ দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে শেষ বয়সে এসে এক বৃদ্ধা মায়ের জায়গা হয়নি ছেলে-বউয়ের সংসারে। বিভিন্নভাবে নির্যাতন চলতো বৃদ্ধা মায়ের ওপর। তাই বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে বাড়ি ছেড়েছে মা।

বড় আশা নিয়ে ভারতে ছোট ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য যশোর বেনাপোল চেকপোস্ট এসেছেন। কিন্তু ছোট ছেলেও তাকে নিবে না বলে ছাপ জানিয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে যশোর বেনাপোল চেকপোস্টের আর্ন্তজাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে এই মা’কে দেখা যায়। ১০ দিন ধরে অনাহারে-অর্ধহারে এখানে তিনি পড়ে আছে।

নাম তার (মা) সুনতি হালদার, তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে বাবুল হালদার বসবাস করে বাগেরহাটের মড়লগঞ্জ উপজেলার হলগাপাড়া মহেশপুর গ্রামে। আর ছোট ছেলে ও দুই মেয়ে থাকে কলকাতায়। স্বামী নরেল হালদার থাকে ভারতে আর বাংলাদেশে বড় ছেলের সাথে থাকতেন তিনি।

ছেলে বাবুল হালদার__এর সামনে তার স্ত্রী কথায় কথায় বিভিন্নভাবে তাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। অবশেষে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন ভারতে ছোট ছেলের কাছে যাবেন বলে। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় আটকে পড়েন সীমান্তের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে।

ছেলের বউ নির্যাতন করলেও পুলিশকে অভিযোগ দেয়নি। কেন এমনটি জানতে চাইলে সুনতি হালদার বলেন, এসব কথা বললে পুলিশতো আগে ছেলেকে ধরে নিয়ে যাবে। অনেক কষ্টে তাকে তিনি মানুষ করেছেন। পুলিশ তাকে মারবে, আঘাত পড়বে তার কলিজায়। সেটা তিনি দেখতে পারবে না বলে কাউকে বলেনি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মহাসিন হোসেন জানান, তিনি অফিস যাওয়ার পথে ক’দিন ধরে দেখছেন ওই বৃদ্ধ নারী প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে পড়ে আছেন। কয়েকবার খাবারও কিনে দিয়েছেন। বিষয়টি তিনি পোর্টথানা পুলিশও বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। এছাড়া তার পরিবারের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

বেনাপোল প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের নিরাপত্তাকর্মী আমিরুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ নারীর কষ্টের কথা শুনে তিনি ভারতে তার ছেলের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার ছেলে জানিয়েছে মাকে নেওয়া তার পক্ষ্যে সম্ভব না। পরে ফোন কেটে দেন। আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ভুলুয়া বাংলাদেশ/এএইচ