বেনাপোলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত ভাষা মিলিয়ে দিলো দু’বাংলার মানুষকে ভুলুয়া বাংলাদেশ ভুলুয়া বাংলাদেশ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১ এসএম স্বপন(বেনাপোল প্রতিনিধি):তারের কাটা উপেক্ষা করে দু’বাংলার মোহনায় উদযাপিত হয়েছে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে ভারতের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত রেখায় দু’দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা যৌথভাবে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে ৫২’র ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানান। অন্তরের অন্তস্থল থেকে মা’ মা’ বলে ডাকা, সমধুর বাংলায় কথা বলা দু’বাংলার বাংলা ভাষাপ্রেমীরা এদিন সৌহর্দ্যের বন্ধনে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কি আবেগ! কি মমতা! দু’বাংলার বাঙালিরা যেনো একই বৃন্তে দুইটি কুসুম। বেনাপোল-পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে অনুষ্ঠিত একুশে উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য। দু’দেশের একুশ উদযাপন কমিটির যৌথ উদ্যোগে পালিত আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের ছন্দ্রমালায় দু’বাংলার মোহনায় স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের সাথে সাথে ভারতের পেট্রাপোলে একুশের মে সানাইয়ের সুর বেজে উঠে। শিল্পিরা গেয়ে ওঠে আব্দুল গাফফার চৌধূরীর লেখা সেই কালজয়ী গান, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…….।” পরে, ওপারের ২১ মে আমন্ত্রিত এদেশের শতাধিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যম কর্মী, কবি, সাহিত্যিক ও সূধী সমাজের মানুষ উপস্থিত হয়। কিছুক্ষণের জন্য হলেও একুশের শোকদিবস বাংলা ভাষার মিলন মেলায় পরিণত হয়। যশোরের খেজুরের গুড় আর কারুকার্যখচিত হাড়ি ভর্তি মিষ্ঠি আতিথিয়তায় নজরকাড়ে ভারতীয় বাঙালিদের। সেই সাথে ভারতীয়দের আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয় বাংলাদেশ থেকে আগন্তুক অতিথিবৃন্দ। এরপরে, জমে উঠে ভারতের বিখ্যাত ফোক শিল্পি স্বপন বসুসহ সা-রে-গা-মা পা’র শিল্পিদের কন্ঠে প্রাণ জুড়ানো বাংলাভাষার গান। অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকার এর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলনে সালাম,বরকত,রফিক,শফিক,জব্বারসহ অসংখ্য বাংলার দামাল ছেলেরা কেবল মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য গর্জে উঠেছিল। রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলো, অধিকার আদায় করেছিলো বাংলায় কথা বলার। সেই সৌভাগ্যের বাংলাভাষা এখন কেবল বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের সীমানা পেরিয়ে আর্ন্তজাতিকভাবে রূপ পেয়েছে। ২১-ফেব্রুয়ারি, একযোগে সারাবিশ্বে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। যশোর-১ (শার্শা) আসনের সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন সংবাদকর্মীদের বলেন- আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে একুশে’র প্রথম প্রহরে দু’বাংলার সীমান্ত মোহনায় অস্থায়ী শহীদ মিনারে দু’দেশের এমপি মন্ত্রীসহ সমাজকর্মীরা একযোগে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এখানে প্রাণের ভাষা বাংলায় কথা বলতে পেরে আমাদের দু’দেশের বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়ের স্পন্দন প্রকম্পিত হয়েছে। অনেকে আবার ভাষার আবেগ ঠিক রাখতে না পেরে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভাষা বিনিময় করেছেন। যার প্রতিফলন প্রতিবছরই এই প্রাণের মিলন মেলায় ঘটে। তবে, বিশ্বব্যাপী করোকালীন সময় হওয়ায় এবার এপার বাংলায় মঞ্চায়িত কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি। নোম্যান্সল্যান্ডে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই সাস্থ্যবিধি মেনে ওপার বাংলার একুশে মে দু’দেশের কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সম্মানীত করা হয়েছে। মঞ্চায়িত হয়েছে বাংলা ভাষার গান। একুশ উদযাপনে বাংলাদেশের পক্ষে যারা উপস্থিত ছিলেন- বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ও ২১ উদযাপন কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, শার্শা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা পূলক কুমার মন্ডোল, নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান, যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল। উপস্থিত ছিলেন- দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার সহকারি সম্পাদক মাহবুব আলম লাবলু, বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মামুন খান, ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান হাবিব, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শামছুর রহমান, ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মুসা মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন- বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমান প্রমুখ। ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বনগা পৌরসভার মেয়র শ্রী শংকর আঢ্য, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের প্রাক্তন বিধায়ক ও মেন্টর গোপাল শেঠ, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সহ সভাপতি শ্রীকৃষ্ণ গোপাল ব্যানার্জী, বনগা লোকসভার প্রাক্তন সংসদ শ্রীমত্তা মমতা ঠাকুর, বনগা দক্ষিণ বিধায়ক শ্রী সুরঞ্জিত বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন- গাইঘাটা বিধায়ক শ্রী পুলেন বিহারি রায়, বনগা পৌরসভা ও প্রাক্তন পৌরসভা ও প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য শ্রীমত্তা কৃষ্ণা রায়, গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রী গোবিন্দ দাস, বনগা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রী প্রদীপ বিশ্বাস, গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শ্রী ধ্যানেশ গুহ, বনগা প য়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শ্রী সৌমেন দত্ত, ছয়ঘরিয়া প্রাক্তন পরিষদের প্রধাণ প্রসেনজিৎ ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন- দমদম পৌরসভা প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য শ্রীমতি রিংকু দে দত্ত, আকাইপুর প্র: প: প্রধান শ্রী সুভাস সাহা, সাহিত্যিক শ্রী বিভাস রায় চৌধূরী, সাহিত্যিক শ্রী স্বপন চক্রবর্তী, বনগা জেলা পুলিশ আইপিএস পুলিশ সুপার শ্রী তরণি হালদার, বনগা মহকুমা শাসক শ্রী প্রেম বিভাস কাঁশারী, বনগা মহকুমা পুলিশ আধিকারি শ্রী অশেষ বিক্রম দস্তিদার। আরও উপস্থিত ছিলেন- আইআরএস ডেপুটি কমিশনার অব কাস্টম শ্রী শিবসাগর, ১৭৯ বিএন.বিএসএফ এ্যাসিস্ট্যান্ট কোম্পানী কমান্ড্যান্ট শ্রী পারভেস ধনকর, প্রেটাপোল মুখ্য অভিবাসন আধিকারি শ্রী টি.কে বিশ্বাষ, ১৫৮ বিএন, বিএসএফ এ্যাসিস্ট্যান্ট কোম্পানী কমান্ড্যান্ট শ্রী সঞ্জয় রাউত, বনগা থানার আইসি শ্রী সূর্য শেখর মন্ডোল প্রমুখ। ভুলুয়াবিডি/এএইচ নিউজটি শেয়ার করুন। পোস্টটি দেখা হয়েছে- ২৪ শেয়ার করুন সারা বাংলা শেয়ার করুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসযশোর-বেনাপোল