মরিচের ঝাল বেড়েছে

মরিচের ঝাল বেড়েছে

প্রকাশিত: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২০

বগুড়া সংবাদদাতা: ঝাল বেড়েছে মরিচের। এক সময়ের সস্তা মরিচ এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ফলন ভালো না হওয়া সত্বেও ভালো দাম পেয়ে খুশি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মরিচ চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, চলতি খরিপ মৌসুমে এ অঞ্চলের ১৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে।

উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১০ টন।  প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কিছুটা কম হলেও বরাবরের মতো এ মৌসুমেও লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মরিচ উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বগুড়ার সবচেয়ে বড় সবজি মোকাম মহাস্থান হাটে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই হাটে প্রতি মন মরিচ বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার ৬০০ টাকায়। অল্প কিছুদিন আগে মরিচের দাম কম থাকলেও, বর্তমানে বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে কৃষকদের।

এদিকে দাম চড়া হলেও পাইকারদের মাঝে মরিচ কেনার ব্যাপক প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা গেছে এ বাজারে। বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মরিচ চাষিরা বাজারে ঢোকার আগেই তাদের ধরে ফেলছেন পাইকাররা। ভ্যান বা অটোরিক্সার উপরেই হাকছেন দাম।

অনেকে রাস্তায়ই বেঁচে দিচ্ছেন মরিচ। আবার এক কৃষকের আনা মরিচ নিতে টানা টানি করতেও দেখা গেছে একাধিক পাইকারকে।

মহাস্থান হাটের এমন চিত্র দেখে মনে হয় মরিচের দাম বাড়তে পারে আরও। বিষয়টি নিয়ে ঐ বাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী ইসমাইল জানান, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মরিচের উৎপাদন কম হওয়ায় ঢাকা সহ অনান্য বড় শহরে মরিচের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা বেশি দাম হলেও মরিচ কিনছি। আর এই দামে কিনেও আমাদের অনেক লাভ হবে।

এই হাটে মরিচ কিনতে আসা উপজেলার গুজিয়া হাটের সবজি বিক্রেতা মাহাবুল ইসলাম জানান, আমি আজ দুই মন মরিচ কিনেছি ৪৬’শ টাকা করে। এই মরিচ বাজারে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবো।

বর্তমান বাজারে মরিচের দাম নিয়ে অনুভূতি জানতে চাইলে উপজেলার বিহারপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, টেপাগারী গ্রামের ওয়ারেশ আলি ও মোকামতলার কাশিপুর গ্রামের আব্দুল বারী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, কিছু দিন আগে আমরা ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা মন মরিচ বিক্রি করেছি। কিন্তু বর্তমানে বাজার অনেক ভালো। আজ ৪৫’শ থেকে ৪৬’শ টাকা দরে মরিচ বিক্রি করলাম। এই দামে বিক্রি করতে পেরে আমরা অনেক খুশি।

দেউলীর মধুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, বাজার খুব ভালো। মরিচের এ রকম দাম থাকলে আমাদের লাভ হবে। কিন্তু সমস্যা হলো মরিচের অনেক গাছে পচারি রোগ ধরেছে। এছাড়া অনেক মরিচ গাছ কুকড়ে যাচ্ছে। ভালো আবহাওয়া থাকলে আমাদের ফসল আরও ভালো হতো।

বাজারে হঠাৎ মরিচের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে কথা হয় শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মুজাহিদ সরকারের সাথে। তিনি সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে অনেক কৃষকের মরিচের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া বর্তমানে চলমান বৃষ্টিতে ফুল ঝড়ে যাওয়ায় উৎপাদন কম হচ্ছে মরিচের। আর একারনে বাজারে মরিচের আমদানি কম ও চাহিদা বেশি হওয়ায় বাজারে মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

ভুলুয়াবিডি/এএইচ

নিউজটি শেয়ার করুন।